বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়ের (সাবেক পুরাতন হাসপাতাল) বেহাল অবস্থা। একসময় এই পুরাতন হাসপাতালে বসেই উপজেলার মানুষদেরকে চিকিৎিসা সেবা দেওয়া হত। কার্যালয়ের সামনে ও আশে-পাশে ভরে গেছে লতা পাতা ও গাছপালায়। অফিসের সীমানার মধ্যে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। যেন দেখার কেউ নেই। স্বাস্থ্য অফিসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।বিশেষ কাজ ছাড়া অফিস কক্ষ সব সময় তালা বদ্ধ থাকে। আশে পাশের ব্যবসায়ীরা ও পথচারিরা ওই অফিসের প্রবেশ পথে প্রসাব করে। আজ মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে গিয়ে কার্যালয় বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসে নিয়মিত একজন পিওন থাকার কথা তাও পাওয়া যায়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, কার্যালয়ের আশেপাশে গাছপালা ও ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গায় গড়ে ওঠেছে অবৈধ স্থাপনা। নির্দিষ্ট কোন ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা না থাকায় এলাকার ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ওই অফিসে চলার পথে রাস্তার পাশে স্তুপ করছে। ময়লা-আবর্জনার পচার দুর্গন্ধে আশপাশের বাসার লোকজন ওপথ চারিরা চলাচল করতে পারছে না। খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সেগুলো ক্রমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অফিসের পাশের জলাশয়গুলোতেও গিয়ে পড়ছে। এতে একদিকে বাতাসে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, তেমনি মশা-মাছিও সৃষ্টি হচ্ছে। কয়েক মাস আগে ভবনটি মেরামত করা হলেও রক্ষাবেক্ষনের অভাবে এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে ওই সরকারি অফিসে কখনো জাতীয় পতাকা টানানো হয় না। নেই কোন সাইনবোর্ড। দেখলে মনে হয় না স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় না অফিস কক্ষ ও অফিসের আশ-পাশ। সাধারন জনগন তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ কাজ ছাড়া কর্তা ব্যক্তিরা অফিসে আসেন না। মাঝে-মাঝে অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান। বেশীর ভাগ অফিসের কক্ষ তালা বদ্ধ থাকে। অফিসের কোন খোঁজ-খবর রাখেন না। স্বাস্থ্য পরিদর্শকের হাট-বাজারে বিভিন্ন দোকানে ভেজাল অভিযান পরিচালনা করার কথা তাকলেও কিন্ত তা হচ্ছে না। তিনি থাকেন পার্শ্ববর্তী উপজেলার দশমিনায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা বলেন, ভাই আপনারা একটু পত্রিকায় লেখেন। স্বাস্থ্য বিভাগের অবস্থা যদি এই হয় তা হলে সাধারন জনগনের অবস্থা কি হবে। এরা জনগনকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ স্বাস্থ্য সস্পর্কে পরামর্শ দিবে যাদে অসুখ বিসুখ না হয়। বরং এখন দেখছি তাদেরকে পরামর্শ দিতে হবে তাদের অফিস পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার। নিয়মিত কার্যালয় না খোলায় দিবা-রাত্রি বহিরাগতের আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। মনে হয় দেখার কেউ নেই। জনগন তাদেরকে না পেয়ে ফিরে যায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়ের অফিস সহায়কের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক স্যার অন্যত্র বদলি হওয়ায় দায়িত্বে আছেন দশমিনা ও পটুয়াখালীর দায়িত্ব প্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাহাবুদ্দিন স্যার। তিনি মাঝে মাঝে আসেন। অফিসের বেহাল অবস্থার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে আগামীকাল বুধবার সব পরিস্কার করে দিবে। অফিসে তিনি নিয়মিত আসেন। নিয়মিত আসলে আজ কেন পাওয়া যায়নি এমন প্রশ্ন করলে কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে পরে ফোন দিবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাহাবুদ্দিন বলেন, অফিস অপরিস্কার বসার মত ভাল স্থান না থাকায় স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয় না এসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করেন। অফিস সহায়ক অসুস্থ মাথায় সমস্যা আছে ১৫দিন পর্যন্ত অফিসে আসেন না।
বাউফল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত সাহা বলেন, বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদটি খালি কেহ আসতে চায়না। দশমিনা অফিস থেকে সাহাবুদ্দিন নামে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক দেওয়া হয়েছে তিনি মাঝে মাঝে আসেন। অফিসের চারপাশে গাছপালা ও ঝোপঝাড় দুই এক দিনে মধ্যে পরিস্কার করা হবে। অফিসে প্রবেশ পথে যাতে প্রসাব করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন ।
Leave a Reply